স্ক্রিপ্ট
অনুষ্ঠান রেকর্ডিং
এর তারিখ ও সময়:
১৯ অক্টোবর ২০১২, সকাল-
১০:০০টা এবং
২০ অক্টোবর ২০১২, সকাল-
১০:০০টা অথবা দুপুর- ০২:৩০টা
শ্রোতাবন্ধুরা আপনাদের সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মোবাইল কনফারেন্সে স্বাগত জানাচ্ছি আমি দিদারুল ইকবাল, বাংলাদেশ মনিটর, সিআরআই।
বিশ্বের প্রতিটি
জাতির জন্য বছরের মধ্যে এমন কয়েকটি দিন আছে, যেগুলোকে তারা নিজেদের কোন না কোন
জাতীয় উৎসবের স্মরণীয় দিন হিসেবে গণ্য করে থাকে। এই দিন গুলোতে তাদের নিজস্ব
রীতি-নীতি ও অনুষ্ঠানের প্রচলন থাকে। সভ্য-অসভ্য প্রত্যেক জাতির মধ্যেই এই প্রচলন
দেখতে পাওয়া যায়। এই দিন গুলোতে প্রত্যেক জাতি তাদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও
বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটায়।
অন্যান্য সাধারণ
দিনের তুলনায় এই দিনগুলোতে পোশাক-পরিচ্ছদ ও মেলামেশার পদ্ধতির মধ্যে বেশ পরিবর্তন
এবং স্বাতন্ত্র্য লক্ষ্য করা যায়।
শ্রোতাবন্ধুরা,
আপনারা জানেন এই মাসটি বাঙালী জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই মাসে
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব “শারদীয়
দূর্গাপুজা” এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বীদেরও ২য় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব “ঈদুল আযহা” ২ দিনের ব্যবধানে
অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে পুরো বাঙালী জাতী এবার একসাথে বৃহত্তর উৎসবের অংশীদার হচ্ছে। আর
এই নিয়ে আমাদের এবারের মোবাইল কনফারেন্সের আসরটি সাজিয়েছি। আমাদের আজকের বিষয় ‘উৎসবে আনন্দে ঈদুল আযহা ও শারদীয় দূগাঁপুজা’।
আজকের আয়োজনে
আমাদের মাঝে অতিথি হিসেবে আছেন:
বাংলাদেশ বেতারের
মহাপরিচালক [অতিরিক্ত সচিব] জনাব কাজী আখতার
উদ্দীন আহমেদ। এছাড়াও আছেন, সিআরআই লিসেনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশ এর
চেয়ারম্যান- সৈয়দ রেজাউল করিম বেলাল, ভাইস চেয়ারম্যান- ওসমান গণী, বাংলাদেশ এনজিও’স ফর নেটওয়ার্ক রেডিও কমিউনিকেশনের সিইও- এ.এইচ.এম.
বজলুর রহমান, চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ছাই য়ূএ মুক্তা।
শ্রোতাদের মধ্যে
রয়েছেন:
মৌলভীবাজার থেকে
সাইফুল আল এমরান মুক্তা, যশোর থেকে হুমায়ুন রেজা, কুমিল্লা থেকে আলী হাজারী, সিলেট
থেকে আসাদ হোসেন, সিরাজগঞ্জ থেকে মিজানুর রহমান, কুষ্টিয়া থেকে বিপ্লব কুমার অধিকারী,
নড়াইল থেকে পলাশ বিশ্বাস, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নাজমুস সাদাত, কুড়িগ্রাম থেকে হুমায়রা
জান্নাত, ময়মনসিংহ থেকে মশিউর রহমান মুন্না, ঢাকা থেকে তাছলিমা আক্তার লিমা, মো:মাহবুবুর
রহমান, জাতীয় সমন্বয়কারী, রেডিও ডিএক্সার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, মাদারীপুর থেকে
রাসেল শিকদার, চট্টগ্রাম থেকে নুরুল ইসলাম মেরাজ।
এবার চলুন, আমরা প্রথমে এই দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব
সম্পর্কে কিছু জেনে নিই।
“ঈদুল আযহা”, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে
বড় দু'টো
ধর্মীয় উৎসবের একটি। বাংলাদেশে
এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ এবং
বকরা ঈদ নামেও পরিচিত। ঈদুল
আযহা এর অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব। আসলে এটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে
ত্যাগ করা। এ
দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের
সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী আল্লাহতায়ালার
সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে উট, গরু, দুম্বা
কিংবা ছাগল কোরবানি বা জবাই
দেয়। আল্লাহর
আদেশে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আপন পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার ঘটনাকে স্বরণ করে সারা
বিশ্বের মুসলিম ধর্মালম্বীরা এই দিবসটি পালন
করে। হিজরি
বর্ষপঞ্জি হিসাবে প্রতিবছর আরবি জিলহজ্জ্ব
মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২
তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহা চলে। একই সময়ে হজ্ব পালনও করা হয়। হিজরী
চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী
ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সবোর্চ্চ ৭০ দিন হতে পারে।
ইসলাম
ধর্মাবলম্বীরা যে অবিস্মরণীয় ঘটনাকে উপলক্ষ করে প্রতি বছর “ঈদুল আযহা” উদযাপন করে তার সূত্রপাত
ঘটেছিল প্রায় তিন হাজার আটশত বছর বা প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে। সেই থেকে আজও
আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে “ঈদুল আযহা” বা কোরবানীর ঈদ বারবার আনন্দ নিয়ে আসে। মানুষে
মানুষে ভেদাভেদ ভুলে ধনী-গরিব ও ছোট-বড় এক কাতারে শামিল হয়ে বৃহৎ একটি উৎসবমূখর
আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। যা আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক জীবন বিকশিত হয়।
এবার জেনে নেওয়া
যাক “শারদীয় দূর্গাপুজা” প্রসঙ্গে।
“শারদীয়
দূর্গাপুজা”, মহাভারতে
উল্লেখ রয়েছে অসুরদের অত্যাচারে
পৃথিবী যখন অতিষ্ট, দেবতারা
যখন স্বর্গ থেকে বিতাড়িত, তখন
অসহায় দেবতারা ব্রহ্মা, বিষ্ণু
ও মহেশ্বরের শরণাপন্ন
হন। এই ত্রিশক্তির সম্মিলিত তেজে এক নারী শক্তির
উৎভব হয়। তিনি
দেবী দূর্গা। দূর্গা
বা নারী রূপে শক্তি কেন? এপ্রশ্নের
উত্তরে বলা হয়েছে, স্বর্গমতের
এক ঈশ্বরের
মত ক্ষমতা পেতে চায় মহিষাসুর। সে
ব্রহ্মা বরে অমরত্ব লাভ করেছিল। তাকে কোন পুরুষ ধ্বংস করতে পারবেনা। বলেছিলেন ব্রক্ষ্মা। তাই মহিসাসুরকে বধ করতেই নারীরূপে দূর্গার আবির্ভাব।
তৎকালীন
সমাজের অনাচার দূরকরতে
অত্যাচারী মহিষাসুর ও তার দল বলকে ধ্বংস করে
পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেই ত্রিশক্তি দূর্গা দেবীর আত্মপ্রকাশের চিন্তা করলেন। দেবী দূর্গা আবার একাকী নন। তিনি অন্যান্যদের নিয়ে যেমন ধন (লক্ষী), শিক্ষা
(স্বরস্বতী), কার্তিক
(যোদ্ধা), গনেশ
(সিদ্ধিদাতা), সকলকে নিয়ে মহিষাসুর বধে ব্রতী হন। সেইদলে পৃথিবীর বিভিন্ন পশুপাখীও ছিল। যার মধ্যে সিংহ থেকে ইঁদুর, হাঁস, ময়ুর, পেঁচা ইত্যাদি। সকলের যৌথ চেষ্টায় সে যাত্রায় অসুররা ধ্বংস হলো । এই হলো দূর্গা কাহিনীর মূল কথা। দূর্গা পূজা আগে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ঋতুতে
হতো। ভারতবর্ষেও
শরৎ ও বসন্ত দুই ঋতুতে
এই পূজা হতো। তবে
বাংলা এবং আশপাশের অঞ্চলগুলোতে ধুমধামের সাথে শরৎ কালেই এই পূজা করা হয়। যে কারণে এই পূজার আর এক নাম শারদীয়া
দুর্গোৎসব।
শাস্ত্রীয়
বিচারে দেবীর এবার আগমন ঘটেছে
গজে (হাতি) চড়ে এবং ফিরেছেন নৌকায় করে। গজে আগমনের অর্থ হলো দেশে প্রচুর ফসল ফলবে। আর নৌকায় গমন
মানে দেশের সকল রোগ-বলায়, অশান্তি সাথে নিয়ে গেছেন ফলে দেশে
শান্তি বিরাজ করবে।
এখন চলুন বন্ধুরা
আমরা চলে যায় আমাদের শ্রোতাবন্ধুদের কাছে। শুনি তারা কে কিভাবে এ মজার উৎসব গুলো
উপভোগ করেছেন, কি ভাবছেন।.........
দিদারুল ইকবাল
বাংলাদেশ মনিটর
চীন আন্তর্জাতিক বেতার
ঢাকা, বাংলাদেশ।
0 comments:
Post a Comment