অমর একুশে ২০১১
গ্রন্থমেলা শুরু হচ্ছে আজ
বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলার পর্দা উঠছে আজ। বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল চারটায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনি বর্ধমান হাউজে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন নোবেল পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরের পর থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে র্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। স্টল তৈরির কাজও চলছিল বেশ জোরেশোরে। এবারের মেলা আয়োজনে সার্বিক ব্যয় ধরা হয়েছে আনুমানিক ৬২ লাখ টাকা।
বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান জানিয়েছেন, এবার নতুন আঙ্গিকে এবং আন্তর্জাতিক আবহের মধ্য দিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হচ্ছে। গতকাল সকালে একাডেমীর সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। এ সময় একাডেমীর সচিব আলতাফ হোসেন, মেলা কমিটির সদস্যসচিব ও পরিচালক সাহিদা খাতুন, উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুর্শিদুদ্দিন আহম্মদ এবং স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ, হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স জীশান কিংশুক হক এবং স্টেপ মিডিয়ার পরিচালক মোস্তফা জাহিদ খান উপস্থিত ছিলেন।
মহাপরিচালক বলেন, এখন থেকে প্রতিবছর একটি মূল ভাবনা নিয়ে গ্রন্থমেলার আয়োজন করা হবে। এবারের মূল ভাবনা হচ্ছে, ‘রবীন্দ্রনাথ’। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মাসজুড়েই রবীন্দ্রনাথের বিষয়ে আলোচনা হবে মেলামঞ্চে।
গ্রন্থমেলায় আন্তর্জাতিক আবহ আনতে প্রতিদিনের সেমিনারে আলোচক হিসেবে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার, শ্যামল চক্রবর্তী, চীনের অধ্যাপক তুং ইয়োছেন, ইয়াং ওয়েইমিং এবং স্পেনের অধ্যাপক খোসে পাস এবার বক্তব্য দেবেন।
এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণকে ভাষাশহীদ, লেখক, সাহিত্যিক, কবি ও বুদ্ধিজীবীদের নামে নয়টি চত্বরে বিন্যাস করা হয়েছে। এগুলো হলো: ভাষাশহীদ, রবীন্দ্র, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, নজরুল, সাহিত্যবিশারদ আবদুল করিম, সুফিয়া কামাল, ধীরেন্দ্রনাথ, সোমেন চন্দ ও রোকেয়া চত্বর। এ ছাড়া শিশু কর্নারে থাকবে শিশু-কিশোরবিষয়ক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের ব্যবস্থা থাকবে নজরুল মঞ্চে। গ্রন্থমেলার মিডিয়া সেন্টারে মেলাসংক্রান্ত তাৎক্ষণিক তথ্য সরবরাহের জন্য ফ্যাক্স ও ই-মেইল-সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া পুরো গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণকে ওয়াইফাই জোনে রূপান্তরিত করা হবে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ একাডেমীর নিরাপত্তাকর্মীরা। মেলা প্রাঙ্গণে থাকবে একাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। মেলায় অননুমোদিত বই কিংবা বেআইনিভাবে প্রকাশিত বই কোনো স্টলে পাওয়া গেলে টাস্কফোর্স আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের মধ্য থেকে সেরা গ্রন্থের জন্য ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং সর্বাধিকসংখ্যক মানসম্মত বই প্রকাশের জন্য শ্রেষ্ঠ তিনটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে।
পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত, ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত নয়টা এবং একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল আটটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।
0 comments:
Post a Comment